ভারতীয় অঙ্গরাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ এর অন্তর্গত বিজয়বাদার নিকট গ্রাম অবস্থিত যেটির নাম কোন্ডাপল্লী। সেই গ্রামের একটি স্থানে এক ধরনের শিল্পচর্চা চলে যেটি কাঠের তৈরি এক ধরনের খেলনা যা কৃষ্ণা জেলার কোন্ডাপল্লীতে বানানো হয়। এই খেলনা গুলিকে কোন্ডাপল্লীর খেলনা বলা হয়। এটিকে অন্ধ্রপ্রদেশের ভৌগোলিক স্বীকৃতি সূচক হস্তশিল্পের মর্যাদায় ‘জিওগ্রাফিক্যাল ইন্দিকেশন্স অফ গুদস্ (রেজিস্ট্রেশন এন্ড প্রোটেকশন) অ্যাক্ট’, ১৯৯৯ এর অনুসারে ঘোষনা করা হয়। সাধারনত ঘরে ঘরে বিভিন্ন প্রকারের এই খেলনা তৈরি করা হয়। বিভিন্ন উৎসবের যেমন সংস্কৃতি এবং নবরাত্রির সময় যাকে ‘বম্মানা কলুত্তু’ ও বলা হয়। এই খেলনা গুলো যারা তৈরি করে তাদের কে ‘অর্য্যক্ষত্রিয়’ বলা হয়। যাদের নাম ব্রাম্ভান্দ পুরানের মধ্যেও উল্লেখ্য রয়েছে। লোকের মুখে শোনা যায় ষোড়ষ শতাব্দীতে এরা নাকি রাজ্যস্থান থেকে কোন্ডাপল্লীতে আসেন এবং তাদের মূল মুক্তারি বলে দাবি করেন, যিনি শিবের আশীর্বাদ প্রাপ্ত একজন সন্যাসী ছিলেন। এই খেলনা তৈরির কাজ প্রায় চারশত বছর ধরে চলে আসছে।
কোন্ডাপল্লীর খেলনা গুলি তেল্লা পনিকি নামক নরম কাঠ দিয়ে তৈরি হয় যা নিকটবর্তী পাহাড়ে পাওয়া যায়। খেলনার প্রকারের উপর ভিক্তি করে কাঠগুলিকে প্রথমে খোদাই করে ধারগুলিকে পালিশ করে মসৃণ করা হয়। এরপর এতে তৈল-রং, জল-রং অথবা উদ্ভিজ্জ-রং এবং এনামেল পেইন্ট ব্যবহার করে রঙিন করা হয়। কারিগরেরা মূলত পুতুল তৈরি করেন প্রাচীন বিশ্বাসের ভিত্তিতে, পশু, পাখি, গরুর গাড়ি, গ্রাম্য জনপথ এবং সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দশাবতার, নাঁচের মূর্তি ইত্যাদি।
এই কাজের মূল্য প্রাচীনকালে শাসকদের কাছে থাকলেও বর্তমানে তার কোন মূল্য নেই। তাই এক্ষেত্রে মুনাফার ও অভাব ঘটে এই কাজ অনেক সময় মধ্যও পশ্চিমা সভ্যতার প্রভাব ও তরুণরা অনাগ্রহী হবার কারণে। বর্ত্মানে এই শিল্পরীতিকে রক্ষা করার জন্য লেপাক্ষী এবং ল্যাঙ্কো ইনস্টিটিউট অফ জেনারেল হিউম্যানি টারিয়ান ট্রাষ্ট প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
Leave a Reply