বাঘরোল; বাঘ কিন্তু ভালোবাসে মাছ খেতে বর্তমানে বিপদগ্রস্ত
04/03/2018

Great Barrier Reef
'গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ' হলো অস্ট্রেলিয়ার অবস্থিত একটি উল্লেখযোগ্য রিফ, যেটি কচ্ছপের এলাকা নামেও পরিচিত। এই রিফটিতে একসময় প্রচুর কচ্ছপের সমারহ ছিল। কিন্তু এখন এখানে পুরুষ কচ্ছপের সংখ্যা প্রায় নগণ্য। গবেষকদের মতে এই রিফে কচ্ছপের লিঙ্গ নির্ধারিত হয় তাপমাত্রার উপর। তাই ক্রমাগত তাপমাত্রা বাড়ার ফলে এই অঞ্চলে স্ত্রী কচ্ছপে ভরে গিয়েছে এবং পুরুষ কচ্ছপের পরিমান ততটাই কমে গেছে। এরফলে কচ্ছপের অস্থিত্ব বিপন্ন হতে পারে বলে গবেষকদের ধারনা। তারা আরও বলেছেন যে, "ভবিষ্যৎ - এ হয়তো এই রিফ কচ্ছপ শূণ্য হতে পারে।"
এই গ্রেট ব্যারিয়র রিফে নানা প্রজাতির প্রানী ও উদ্ভিদ দেখা গেলেও গোটা এলাকায় কচ্ছপকুল প্রায় নিশ্চিন্ন হয়ে যাওয়ার পথে। প্রানী ও উদ্ভিদের মধ্যে কী বদল ঘটছে তা জানার জন্য কয়েক দশক ধরে ন্যাশনাল ওশানিক এন্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এই এলাকার পরিবর্তনের উপর নজর রাখছে এবং তাতে দেখা যাচ্ছে যে দুইবচ্ছর ধরে এই এলাকায় প্রায় কোনোই গ্রিন সি কচ্ছপ জন্ম নিচ্ছে না তার কারণ বেড়ে যাওয়া তাপমাত্রা।
২ লক্ষের মতো গ্রিন সি কচ্ছপ রয়েছে নর্দার্ন রিফো সমুদ্র উপকূলে। প্রবাল প্রাচীরে থাকা এই বিপুল সংখ্যক কচ্ছপের লিঙ্গ নির্ধারন কীভাবে সম্ভব? ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কীভাবে কচ্ছপের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে তা 'জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে কচ্ছপের অস্তিত্ব নিয়ে আশু বিপদ' শীর্ষক গবেষণাপত্রে বলা হয়, যা প্রকাশিত হয়েছে 'কারেন্ট বায়োলজি' নামে একটি জার্নালে। এর উওর বার করার জন্য একাধিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। হরমোন ও জিনত্বের সাহায্যে জানা গিয়েছে, পুরুষ কচ্ছপ আর জন্মাচ্ছে না 'গ্রেট ব্যারিয়র রিফে'
গ্রিন সি কচ্ছপ সমুদ্রতটের বাসায় যা ডিম পারে তা ফুটে ছানা বের হওয়ার সময় য়ে তাপমাত্রা থাকে তার ভিক্তিতেই কচ্ছপের লিঙ্গ স্থির হয়। যদি তাপমাত্রা কম হয় তাহলে পুরুষ কচ্ছপ ও তাপমাত্রা বেশি হলে স্ত্রী কচ্ছপ জন্ম নেয়। সুতরাং লিঙ্গ নির্ধারন সংক্রান্ত ব্যাপারটাই নির্ধারিত হয় তাপমাত্রা দ্বারা। তাই সম্পতি এই এলাকায় তাপমাত্রা বাড়ার কারণে স্ত্রী কচ্ছপ বেশি পরিমানে জন্মাচ্ছে এবং তাতে নগণ্য হচ্ছে পুরুষ কচ্ছপের সংখ্যা।
বর্তমানে 'গ্রেট ব্যারিয়র রিফে' বেশি বয়সি কচ্ছপের মধ্যে স্ত্রী কচ্ছপের সংখ্যা ৮৭ শতাংশ, মাঝারি বয়সি কচ্ছপের মধ্যে স্ত্রী কচ্ছপের সংখ্যা ৯৯ শতাংশ। আর একে বারে শিশু কচ্ছপদের মধ্যে স্ত্রী কচ্ছপের সংখ্যা ৯৯ শতাংশ। সুতরাং বলা যেতেই পারে যে বেশি বয়সি পুরুষ কচ্ছপের মৃত্যুৎ পর এই এলাকার রাজত্ব করবে স্ত্রী কচ্ছপরা। পুরুষ কচ্ছপের ক্ষেত্রে সামান্য অস্তিত্ব থাকলেও নবজাতকদের ক্ষেত্রে তা একে বারেই নগণ্য। যেটি জানা যায় সম্পতি এনওএএ গবেষণা থেকে।
গবেষক মাইকেল জনসন জানান যে, 'গ্রিন সি কচ্ছপকে তাপমাত্রা যে ভাবে প্রভাবিত করছে, অন্যান্য এলাকায় তাপমাত্রাও কচ্ছপদের একই ভাবে প্রভাবিত করছে কিনা। সে ক্ষেত্রে একই ভাবে অন্যান্য এলাকায় কচ্ছপের লিঙ্গ নির্ধারন করতে দেখতে হবে। এই গবেষনাটি সাউদার্ন গ্রেট ব্যারিয়ারে প্রথম চালানো হয় এবং তাতে দেখা যাচ্ছে যে সেখানে স্ত্রী কচ্ছপের পরিমানের সংখ্যা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
মেরু ভালুকের করুন পরিণতি একাধিক ছবি এসেছে আমাদের কাছে, তার প্রধান কারণ হল এই বিশ্ব উষনায়ন। খাদ্যের অভাব না হলেও লিঙ্গের ভারসাম্য হারানোর কারণে গ্রিন সি কচ্ছপের বিলুপ্তি ঘটতে পারে নার্দান রিফ থেকে। আন্তর্জাতিক বন্যপ্রান তহবিলের অস্ট্রেলিয়া শাখার প্রধান ডারমী ও 'গরম্যান' বলেন, "জলবায়ু পরিবর্তনের আর একটি কুফল সম্পর্কে আমরা জানতে পারলাম। সবচেয়ে বড় কথা হলো গ্রিন সি কচ্ছপদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে কিন্তু সংখ্যা কমছে না যা লিঙ্গ নির্ধারন গবেষনা থেকে জানা যায়। তাপমাত্রা যেহেতু গ্রিন সি কচ্ছপের লিঙ্গ নির্ধারনের প্রধান শ্ত্রু তাই তাপমাত্রা কমানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার হচ্ছে যেমন কৃত্রিম বৃষ্টি নামানো, সমুদ্রতটকে ঘোরাটোপ করা যাতে তাপমাত্রা কম থাকে ডিম ফুঁটে পুরুষ কচ্ছপ বের হতে পারে।
Leave a Reply